তালিবুল ইলমদের লেখাপড়ার উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে জামিয়া বছরব্যাপী বড় তিনটি পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে। প্রথমটি ঈদুল আযহার পূর্বে, দ্বিতীয়টি রবিউল আওয়াল মাসে এবং তৃতীয়টি শাবান মাসে হয়ে থাকে।
পরীক্ষা দুইভাবে নেওয়া হয়; মৌখিকভাবে ও লিখিতভাবে। হিফ্জ বিভাগের সকল পরীক্ষা এবং নূরানী, নাযেরা ও কিতাব বিভাগের হেদায়াতুন্নাহু পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু কিতাবের পরীক্ষা মৌখিক হয়ে থাকে। তাখাসসুস বিভাগের কিছু বিষয়ের পরীক্ষাও মৌখিক নেওয়া হয়। এছাড়া কিতাব বিভাগের অন্য সকল পরীক্ষা লিখিতভাবে হয়ে থাকে।
লিখিত পরীক্ষা অত্যন্ত সতর্কতা ও কঠিন পর্যবেক্ষণের সাথে তিনঘন্টাব্যাপী হয়ে থাকে। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তার দিকেও কঠিন দৃষ্টি রাখা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস, নকল ইত্যাদি মহামারি থেকে মুক্ত থাকার ক্ষেত্রে অত্র জামিয়া আল্লাহর রহমতে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও বছরের শুরুতে নতুন ভর্তিচ্ছু তালিবুল ইলমদেরকে পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে ভর্তি করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় নির্দিষ্ট নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হলেই কেবল ভর্তি নেয়া হয়। নির্দিষ্ট নম্বর না পেলে ভর্তি নেওয়া হয় না। ভর্তি পরীক্ষা সাধারণত মৌখিক হয়ে থাকে। তবে তাখাসসুস বিভাগগুলোর পরীক্ষা মৌখিক ও লিখিত উভয়ভাবে হয়ে থাকে।
ফুলছোঁয়া মাদরাসা বাংলাদেশ কওমী মাদরাসার বৃহত্তম শিক্ষাবোর্ড বেফাকের অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। সে হিসেবে তাইসীর, নাহবেমীর, শরহে বেকায়া ও মেশকাত জামাতের বার্ষিক পরীক্ষা বেফাকের অধীনে হয়ে থাকে। বেফাক পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে উপরোক্ত জামাতগুলোতে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর তাকমীল জামাতের তালিবুল ইলমরা বাংলাদেশ কওমী মাদরাসার সর্বোচ্চ শিক্ষাবোর্ড ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া’ বাংলাদেশ এর অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে।
বেফাক ও হাইয়ার পরীক্ষায় যারা মেধা তালিকায় স্থান লাভ করে বা মুমতায (ষ্টারমার্ক) পেয়ে উত্তীর্ণ হয় তাদেরকে জামিয়ার পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। সাথে সাথে জামিয়ার পক্ষ থেকে তাদেরকে মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। এ ভাতা পরবর্তী কেন্দ্রীয় পরীক্ষা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
এছাড়াও চাঁদপুর জেলা কওমী সংগঠনের অধীনে পুরো চাঁদপুরের মীযান জামাতের তালিবুল ইলমদের নিয়ে মীযান কিতাবের উপর যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, জামিয়ার ছাত্ররা প্রতিবছর সেখানে শ্রেষ্ঠত্বের স্বাক্ষর রেখে আসছে। শুধু তাই নয়, ধারাবাহিক উন্নতি ও আদর্শ বিচারে এ জামিয়া বাংলাদেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পেয়েছে বেফাকের পক্ষ থেকে।